"স্বাধীনতা"! আজকাল আমরা কত সহজেই শব্দটি দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই সাধারন শব্দটিই ছিল একসময় স্বপ্নেরও অতীত। বহু শাসকের দ্বারা বাংলার মাটি বহুবার হয়েছে পদদলিত। বাংলার মানুষ হয়েছে শোষিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত, লুণ্ঠিত, অত্যাচারিত। বাংলার ইতিহাস বাঙালির তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বহুবার। একসময় বাঙালি প্রায় ভুলেই যেতে বসে তারা একটি স্বকীয় জাতি। ঠিক এমন সময় আবির্ভাব ঘটে এক অবিসংবাদিত নেতার। তিনি রাজনীতিকে ক্ষমতার উৎস হিসেবে দেখতেন না, বরং তার দূরদর্শিতা, দায়িত্ববোধ এবং বাঙালির অধিকার রক্ষার প্রতি সোচ্চারতা জয় করে বাঙালির হৃদয়। এক সময় তিনি বাঙালিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। যেই বাঙালি এত দিনে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল তাদের নিজস্বতার কথা, তারা নতুন করে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। তিনি শুধু বাঙালিকে স্বপ্ন দেখিয়েই বসে থাকেননি, কষেছেন সেইমতো পরিকল্পনাও। আর তা বাস্তবায়নে তাকে বহুবার করছে হয়েছে কারাবরণ। কিন্তু তিনি তার সেই অবস্থানে ছিলেন অবিচল। ১৯৭০ সালের বাঙালির অধিকার রক্ষার নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভের পরও যখন তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়না, তিনি বুঝে যান এরা আর কখনোই আমাদের অধিকার দেবে না। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে তিনি বাঙালিকে সরাসরি স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান জানান। কিন্তু এরপরই ২৬ শে মার্চ মধ্যরাতে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করে যান। শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। তার অনুপস্থিতিতেও মুক্তিযুদ্ধ চলতে থাকে তার নামে, এবং তার দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক। একসময় দেশ স্বাধীন হয়। পরাধীনতার আঁধার কাটিয়ে মুক্তির দৃপ্ত শিখায় যিনি বাঙালিকে স্বাধীনতার পথ দেখালেন, তিনিই আমাদের "পথিকৃৎ" জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের এই গল্পে মূলত গ্রামীণ সাধারণ মানুষের উপর বঙ্গবন্ধুর প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। তারা সামনাসামনি না দেখে, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ না হয়েও যেভাবে বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসেছিল, তা একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের পক্ষেই সম্ভব। শর্ট ফিল্মটি তৈরি করতে গিয়ে শুরুতেই ছিল হাজারো সংশয়। আমরা বেশির ভাগই এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। কারোরই তেমন অভিনয় দক্ষতা নেই। নেই কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা তো লেগেই আছে। হাটি হাটি পা পা করে শুরু করলাম। সমস্যা দেখা দিল শর্ট ফিল্ম ধারণের জায়গা নিয়ে। খুলনা মহানগরীতে গ্রামীণ পরিবেশ খুঁজতে যাওয়া ব্যর্থ চেষ্টা-ই না, হাস্যকরও বটে! তাও অনেক কষ্টে দুইটি জায়গা খুঁজে পেলাম। কিন্তু বাধ সাধলো লকডাউন। আমরা শুটিংয়ের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে গেলেও লকডাউন এ শুটিং এর অনুমতি দেওয়া হয়নি। যার ফলে আমরা অনেকটা পিছিয়ে পড়ি। এমন হাজারো বাধা কাটিয়ে শেষমেষ এই শর্টফিল্মটি তৈরি হয়।